ঢাকা | শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ | ৩ কার্তিক ১৪৩১

#খুলনা-মোংলা রেলপথ #উদ্দেশ্য ছিল খুলনা থেকে মোংলা-বন্দরে পণ্য পরিবহন

চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে চলে ১টি ট্রেন

খুলনা-মোংলা রেলপথ দিয়ে মাত্র একটি ট্রেন চলাচল করে।

খুলনা থেকে মোংলা বন্দরে ট্রেনে পণ্য পরিবহনে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ বসানো হয়। মোংলা বন্দরের সঙ্গে খুলনা ও যশোরের বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজ করাও এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। এজন্য প্রকল্পের আওতায় মোংলা বন্দরের ভেতরেও রেলপথ বসানো হয়। কিন্তু উদ্বোধনের এক বছর হতে চললেও এ রুটে চলছে মাত্র একটি যাত্রীবাহী ট্রেন। পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়ে নেই কোনো অগ্রগতি। ফলে বিপুল অঙ্কের টাকায় নির্মিত এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য অর্জিত হচ্ছে না। এতে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে খুলনাবাসীর মধ্যে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, মোংলা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত নতুন রেলপথ উদ্বোধন করা হয় ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর। উদ্বোধনের সাত মাস পর গত ১ জুন থেকে পুরোনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ট্রেনটি মঙ্গলবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন মোংলা থেকে খুলনা হয়ে যশোরের বেনাপোল পর্যন্ত যাওয়া-আসা করে। ট্রেনে আসন সংখ্যা ৬৭৬টি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার মোহাম্মদনগর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটিতে যাত্রী বোঝাই। এই স্টেশন থেকেও শতাধিক যাত্রী ট্রেনে ওঠেন। কিন্তু বেশির ভাগই সিট পাননি। দাঁড়িয়েই তারা মোংলার উদ্দেশে রওনা দেন।

লিয়াকত হোসেন ও সাইফুল আলম নামে দুই যাত্রী বলেন, শুনেছিলাম, এই রুটে একাধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। একটি মাত্র ট্রেনে অনেক ভিড় হলেও চলাচল করতে হচ্ছে।

এই স্টেশনের বুকিং সহকারী মাসুম বিল্লাহ বলেন, এই রুটে যাত্রীদের আরও ট্রেনের চাহিদা আছে। কিন্তু দিনে একবার নির্দিষ্ট সময় ছাড়া যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করতে পারছেন না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ তৈরি করে গত সাড়ে চার মাস ধরে মাত্র একটি ট্রেন চালানো হচ্ছে। এই রুটে দ্রুত যাত্রীবাহী অন্তত আরেকটি এবং পণ্যবাহী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রেন চালু করা প্রয়োজন। তা না হলে এত অর্থ ব্যয় কোনো কাজে আসবে না।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আহম্মদ হোসেন মাসুম বলেন, জনবল, ইঞ্জিন ও কোচ সংকট রয়েছে। সে কারণে এই রুটে আপাতত যাত্রী ও পণ্যবাহী নতুন ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না। এসব সংকট নিরসন করে দ্রুত আরও ট্রেন চালু করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ভারতীয় দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো ও ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। এ প্রকল্পে ব্যয় হয় ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলপথে স্টেশন রয়েছে আটটি।



Loading...