একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে ঝড়-বৃষ্টির কারণে বোরো ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা।
জেলার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ে ধান গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে।
প্রাথমিক ভাবে কৃষি বিভাগ ২১৩ হেক্টর জমির বোরো ধান কালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা করছেন। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে সোনালী রং ধারণ করা বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে চলতি ২০২১-২০২২ নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় ৬৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৮ মে. টন। বর্তমানে কৃষকরা সোনালী রং ধারণ করা ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে টুকটাক ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির আওতায় জেলায় এবার ১৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলায় ৪৫ ভাগ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়ন, জামালপুর ইউনিয়ন, পুরানাপৈল ইউনিয়ন, ধলাহার ইউনিয়ন, বম্বু ইউনিয়ন, আমদই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে বোরো ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করা ধানের শীষগুলো হেলে পড়েছে জমিতে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় বোরো ধান গাছগুলো পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে প্রায় ২১৩ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা করছেন কৃষি বিভাগ।
কোমরগ্রাম এলাকার কৃষক আজহার আলী, শ্যামপুর এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না তারা। দু/একজন পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু পানিতে ধান ডুবে থাকার কারণে শ্রমিকরা সেগুলো কাটতে চাচ্ছেন না। কেউ কেউ বিঘা প্রতি সাড়ে ছয় হাজার থেকে সাত হাজার টাকা নিচ্ছেন এক বিঘা জমির ধান কাটতে। যা গত বছর ছিল তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
আবহাওয়া খারাপ ও শ্রমিক সংকটের কারণে নিজেরাই কিছু কিছু করে ধান কেটে ঘরে তুলছেন বলে জানান বুলুপাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর, নজরুল , সামছুদ্দিন, সাইদুল ইসরাম।
এবার প্রকারভেদে সাড়ে আটশ থেকে এক হাজার টাকা মণ পর্যন্ত বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে বর্তমান বাজারে।
জেলায় ধান কাটার জন্য পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে শ্রমিকরা আসছেন বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, এবার ধানের ফলন খুব ভালো ছিল। কালবৈশাখীর কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। আবার বোরো ধান কাটা, মাড়াই নিয়ে কৃষকের কিছুটা ভোগান্তি থাকে।