গাজীপুরে পানির নিচে ১২০ হেক্টর জমির বোরো ধান

গাজীপুর জেলা, মহানগর ও কালিয়াকৈর উপজেলার ১২০ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। গত দু’দিন ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদী, গাজীপুরের তুরাগ এবং কালিয়াকৈর উপজেলার মকশ বিলসহ কয়েকটি বিলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও কৃষকেরা এ তথ্য জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরের ইসলামপুর, ইটাহাটা, কড্ডা, মজলিসপুর, লাটিভাংগা, সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার তুরাগ নদের পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ, কালিয়াকৈর উপজেলার মকশ বিল, মৌচাক এলাকার ধানের আবাদি জমি পানিতে ডুবে গেছে।

ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার কৃষক ইন্তাজ উদ্দিন জানান, তিনি এবার ১ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন। ফসল ভালো হয়েছে। আর কয়েকটা দিন সময় পেলে ধানগুলো পুরোপুরি পেকে যেত। কিন্তু হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার থেকে তুরাগ নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জমির ধান তলিয়ে গেছে। তার মতো অনেক কৃষক এমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অনেকের মতো তিনিও বুধবার সকাল থেকে আধাপাকা ধান কাটা শুরু করেছেন।

গাজীপুর মহানগরের মজলিসপুর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি এবার ৭০ শতক জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো আবাদ করেন। ধানের ছড়াগুলো বেশ ঘন ছিল। ধানগুলো কেবল কাঁচা এবং আধাপাকা হয়েছে। এরই মধ্যে সব ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলেও কাঙ্খিত ফসল এ মুহুর্তে ঘরে তোলা সম্ভব হবে না। জমিতে দুই থেকে তিন ফুট পরিমাণ পানি রয়েছে। এ মুহুর্তে ধান কাটা শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না।

কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে। হঠাৎ নদী ও বিলের পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার মকশ বিল, কালিয়াদহ বিল, রঘুনাথপুর, বোয়ালী বিল, চান পাত্রা, আলুয়া বিলসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০০ বিঘা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান কাটার উপযোগী না হলেও কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখে পড়েছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, যেসব জমির ধান প্রায় পেকে গেছে সেসব জমির চাষিরা ধান কাটা শুরু করেছেন। কিছু ধান উঠানো সম্ভব হবে। তবে বেশির ভাগ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। উপজেলা এবং উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা তালিকা প্রস্তুত করছেন। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।